পবিত্র শাবান মাসের ফজিলত ও কিছু কথা
আহমাদ মুঈনুদ্দীন খন্দকার:
আরবি মাস গণনায় শাবান মাস ক্রমানুসারে অষ্টম মাস । বিজ্ঞানের উৎর্কষতার এই সময়ে সীমাহীন প্রজ্ঞার দাবি অনুযায়ী আল্লাহ তা’আলার ইবাদতের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি, বরং শতাব্দির বহমান এ যুগে চির শান্তির বাতায়ন খুলে দিতে ইবাদতের আবশ্যকতা জীবনের দৈনন্দিন এক অংশই বটে। তাই আল্লাহ পাক কিছু মাস ও দিবসকে অন্যান্য মাস ও দিবসের উপর মর্যাদাপূর্ণ করেছেন যা বান্দার অপূর্ণাঙ্গতার পরিসমাপ্তি করতে। অন্তরালে তাই গোলামিয়াতের মজবুত পাথেয়র শামিল । উদ্দেশ্য সৎ কর্ম সম্পাদনে মানুষের প্রেরণা ও উৎসাহে নতুন মাত্রা সংযোজন করা। অধিক মাত্রায় আমলে সালেহ করে উৎকর্ষ সাধনের পথ সুগম করা।
চির সত্য হল মুসলমানগণ দৈনিক পাঁচবার ঘোষণা দিয়ে ঘটা করে অনুষ্ঠান তথা নামাজ পরচিালনা করে যা প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির জন্যই ফরজ । এই জন্যই বলতে পারি ঈমানদার ও মুসলমানের জন্য প্রতিটি দিনই হল ঈদ ও আনন্দের। যেখানে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় ও মজবুত প্রমাণে অনন্য। তেমনি বছরে ১২টি মাসের ৩৬৫ দিনের মধ্যে প্রসিদ্ধ কিছু দিনক্ষণ এবাদাতের রকমারি আয়োজনে উদযাপন অত্র হাদিসের কারণেই কতটা জরুরি তা জ্ঞানবানদের জন্য বড় একটা সমাধান ও জিজ্ঞাসার জবাব।
مَن سَنَّ في الإِسلام سُنَّة حَسَنَة فله أجرُها وأجرُ من عمل بها من بعده ، من غير أن يَنْقُصَ من أجورهم شيء مَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا بَعْدَهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَىْءٌ وَمَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ
অর্থ: যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো একটি নতুন উত্তম সুন্নাত বা রীতি চালু করল আল্লাহর নিকট থেকে সে উত্তম প্রতিদান পাবে, আর যে তা আমল করবে সমানুরূপ সওয়াব তার (রীতি প্রচলন কারীর) নামে আমলে সংযোজিত হবে তার থেকে কোনো অংশ কমিয়ে দেয়া হবেনা । আর যে ব্যক্তি মুসলমানদের মধ্যে কোনো মন্দ পন্থা প্রচলন করল এবং সে পন্থার ওপর আমল করা হল, সেই পন্থার ওপর আমল করার গুনাহ প্রচলনকারীর আমলনামায় লেখা হবে, কিন্তু আমলকারীর কোন গুনাহ হ্রাস করা হবে না। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ২৩৯৮)
উক্ত হাদিস মুবারকের ব্যাখ্যায় কুরআনের এই আয়াত সমর্থন করে
ٌ وَلِكُلٍّ دَرَجَاتٌ مِمَّا عَمِلُوا ۚ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ سورة الأنعام الآية : ১৩২
প্রত্যেকের জন্যে তাদের কর্মের আনুপাতিক মর্যাদা আছে এবং আপনার প্রতিপালক তাদের কর্ম সম্পর্কে বেখবর নন।
উক্ত হাদিস ও কুরআন মাজিদ আমাদের যে তথ্য প্রদান করে তা আল্লাহর জন্য সমষ্টিগত এবাদাত করা, রাত্র ব্যয় করা, মাসব্যপী এবাদাতের কর্মযজ্ঞ চালু রাখা মহান বারি তয়ালার পক্ষ থেকে মহান নেয়ামত । যার প্রতিদান ও মহান, আর এটা কোন মানব রচিত দুনিয়ামূখী কোন কর্মকান্ড নয় ।
হারাম বা পবিত্র মাস গুলোর সংখ্যা ও মর্যাদা:
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللَّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ۚ ذَٰلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ ۚ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ ۚ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
অর্থ: নিশ্চই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারটি, আসমান সমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন।
এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, আল্লাহ তাআলা মাখলুকাতের প্রতি অনুগ্রহ করে বিশেষ বিশেষ দিন, রাত ও মাসকে ফজিলতময় ও বরকতপূর্ণ করেছেন। দিন, রাত, মাসের ইবাদতে অনেক ছাওয়াবের ঘোষণাও দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিত এ সব দিন, রাত, মাসের ফজিলত ও বরকত লাভে সচেষ্ট হওয়া।
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ قَالَ إِنَّ اللهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) নবী করিম স. (হাদীসে কুদ্সী স্বরূপ) তাঁর প্রতিপালক হতে বর্ণনা করে বলেন যে, আল্লাহ্ ভাল-মন্দ লিখে দিয়েছেন। এরপর সেগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি কোনো সৎ কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে করল না, আল্লাহ্ তাঁর কাছে এর জন্য পূর্ণ সওয়াব লিখবেন। আর সে ভাল কাজের ইচ্ছা করল এবং তা বাস্তবেও করল তবে আল্লাহ্ তাঁর কাছে তার জন্য দশ গুণ থেকে সাতশত’ গুণ পর্যন্ত এমন কি এর চেয়েও অধিক সওয়াব লিখে দেন। আর যে কোনো মন্দ কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে পরিণত করল না, আল্লাহ্ তাঁর কাছে তার জন্য পূর্ণ সওয়াব লিখবেন। আর যদি সে মন্দ কাজের ইচ্ছা করার পর বাস্তবেও তা করে, তবে তার জন্য আল্লাহ্ মাত্র একটা গুনাহ লিখেন। [মুসলিম ১/৫৯, হাঃ ১৩১, আহমাদ ৩৪০২] (ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৭)সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪৯১ তাখরিজ: সহিহ হাদিস]
অত্র হাদিস আমাদের কত সুন্দর ভাবে নেক আমলের প্রতি উৎসাহ যোগায় । অথচ কেউ কেউ আমাদের নেক আমলের মহান নেয়ামত থেকে মাহরুম করার দারুন শ্রমসাধনা করে যাচ্ছে যা বড়ই হতাশার ও কষ্টের ।
শাবান মাস নামকরণের কারণ:
আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী র. (মৃত্যু- ৮৫৫ হিজরী) তাঁর বিখ্যাত কিতাব “উমদাতুল কারী আলা শারহি সহীহিল বুখারীতে” বলেন,
واشتقاق شعبان من الشعب وهو الاجتماع سمي به لأنه يتشعب فيه خير كثير كرمضان وقيل لأنهم كانوا يتشعبون فيه بعد التفرقة ويجمع على شعابين وشعبانات
অর্থাৎ “শাবান” শব্দটির উৎপত্তি شعب হতে, অর্থ হলো একত্রিত করা। যেহেতু এই মাসটি রমজানুল মোবারকের ন্যায় অসংখ্য নিয়ামত, খাইরিয়াত, বরকত সমূহকে একত্রিত করে এ জন্য এই মাসটিকে شعبان নামকরণ করা হয়। (উমদাতুল কারী, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী র. খ- ১৭ পৃ.৪৯ শামেলা)
শাবান এর শাব্দিক অর্থ ছড়িয়ে দেওয়া, বিচ্ছিন্ন হওয়া। যেহেতু এ মাসে অসংখ্য কল্যাণ আর রহমতের বৃষ্টি বর্ষিত হয় এবং হায়াত, মওত, রিজিক এবং তাক্বদিরের নানা বিষয় ফেরেশতাদের হাতে ন্যস্ত করা হয়, এ জন্য এ মাসের নাম রাখা হয়েছে ‘শাবান’। অথবা এ কারণে এ মাসের নাম ‘শাবান’ রাখা হয়েছে, আরবরা রজব মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ থাকার পর এ মাসে যুদ্ধ করতে ছড়িয়ে পড়ত।
شعبان ( শাবান) শব্দের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ:
বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী র. (মৃত্যু- ৫৬১ হিজরী) বলেন,
شعبان خمسة أحرف : ش+ ع+ ب+ ا+ ن : إن الشين من الشرف- والعين من العلو- والباء من البر- والالف من الألفة- والنون من النور-
শাবান শব্দটির মধ্যে পাঁচটি অক্ষর আছে। প্রত্যেকটি অক্ষর এক একটি অর্থ বহন করে। যথা :
এক. “শীন” দ্বারা (شرف) শরফ বা মর্যাদা বুঝানো হয়েছে।
দুই. “আইন” দ্বারা (علو) উলু বা উচ্চ মর্যাদা বুঝানো হয়েছে।
তিন. “বা” দ্বারা (بر ) বির বা কল্যাণ বুঝানো হয়েছে।
চার. “আলিফ” দ্বারা (الفة) উলফাহ বা ভালবাসা বুঝানো হয়েছে।
পাঁচ. “নূন” দ্বারা (نور) নূর বা আলো বুঝানো হয়েছে।
যারা এ মাসে ইবাদত বন্দেগী করবে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এ পাঁচটি পুরস্কার দিয়ে ধন্য করবেন।
শাবান মাসের তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণ:
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
وَرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَاء وَيَخْتَارُ
অর্থাৎ আপনার পালনকর্তা যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, আর যাকে ইচ্ছা মর্যাদা দান করেন।
শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী র. (মৃত্যু- ৫৬১ হিজরী) পবিত্র কুরআনের উপরোক্ত আয়াতকে দলীল দিয়ে বলেন, আল্লাহ তায়ালা সকল সৃষ্টির মধ্যে চারটি বস্তুকে পছন্দ করেছেন। এই চারটি বস্তুর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা একটিকে বেশি মর্যাদা দান করেছেন। যেমন: ফেরেশতাদের মধ্যে হযরত জিবরাঈল (আ.), হযরত মিকাঈল (আ.), হযরত ইসরাফিল (আ.), হযরত আযরাঈল (আ.) শ্রেষ্ঠ। আর তাদের মধ্যে হযরত জিবরাঈল (আ.) অধিক মর্যাদাসম্পন্ন করেছেন।
আর নবীগণের মধ্যে হযরত ইবরাহীম (আ.) হযরত মুসা (আ.), হযরত ঈসা (আ.) ও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর তাদের মধ্যে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বাধিক প্রিয় ও শ্রেষ্ঠতম মর্যাদা দান করেছেন ।
সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা., হযরত ওমর ফারূক (রা.) হযরত ওসমান গনি (রা.), ও হযরত আলী (রা.)। আর তাদের মধ্যে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) সর্বশ্রেষ্ঠ।
মসজিদে কুবা, মসজিদে নববী, মসজিদে আকসা, মসজিদে হারাম আর তন্মধ্যে মসজিদে হারাম অধিক মর্যাদা সম্পন্ন।
দিনের মধ্যে ঈদুল ফিতরের দিন, আযহার দিন এবং আরাফা ও আশূরা শ্রেষ্ঠ। তন্মধ্যে আরাফার দিন অধিক মর্যাদা সম্পন্ন।
রাতের মধ্যে শবে কদর, শবে বরাত, শবে জুমা, শবে ঈদ শ্রেষ্ঠ। তন্মধ্যে শবে কদর অধিক মর্যাদা সম্পন্ন।
স্থানসমূহের মধ্যে মক্কা, মদীনা, বাইতুল মাকদিস ও মসজিদুল আকসা শ্রেষ্ঠ। আর তন্মধ্যে মক্কা শরীফ অধিক মর্যাদা সম্পন্ন।
আর নদীর মধ্যে জায়হুন, সায়হুন, ফুরাত ও নীলনদ শ্রেষ্ঠ। আর ফুরাত নদী সবচেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন।
অনুরূপ মাসের মধ্যে রজব, শাবান, রমজান ও মহররম শ্রেষ্ঠ। তন্মধ্যে শাবান নবীর মাস হিসাবে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন। যেমন: অন্যান্য নবীদের ওপর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মর্যাদা অনন্য। (গুনিয়্যাতুত ত্বালেবিন, পৃষ্ঠা নং- ৩৪০)
সুন্নাহর আলোকে শাবান মাসের ফযীলত:
এক.
আল্লামা আব্দুর রহমান সাফুরী ‘‘নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফায়িস” কিতাবে লিখেন-
شعبان شهري و رجب شهر الله و رمضان شهر أمتي شعبان المكفر و رمضان المطهر
অর্থাৎ শাবান আমার মাস, আর রজব আল্লাহ তায়ালার মাস এবং রমযান আমার উম্মতের মাস। শাবান মাস মানুষের গুনাহ মোচন করে আর রমযান মাস গুনাহ থেকে পাক পবিত্র করে। (আল্লামা আব্দুর রহমান সাফুরী: নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফায়িস ১ম খ- পৃ.১৪৬)
উপরোক্ত হাদীস হতে একথা জানা গেল যে, কোনো জিনিসের সম্পর্ক প্রিয়জনের সাথে যুক্ত হলে তার মর্যাদা বহুগুণে বেড়ে যায়। তেমনি শাবান মাসের সম্পর্ক রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে যুক্ত হওয়ায় এর মর্যাদাও অন্য মাসের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন: তিনি অন্যান্য নবীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
দুই.
আল্লামা আব্দুর রহমান সাফুরী “নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফায়িস” কিতাবে লিখেন-
فضل رجب على سائر الشهور كفضل القرآن على سائر الكتب وفضل شعبان على سائر الشهور كفضلي على سائر الأنبياء و فضل رمضان على سائر الشهور كفضل الله على خلقه.
অর্থাৎ, রজব মাসের মহত্ব অন্যান্য মাসের ওপর এমন, যেমন কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব অন্যান্য সকল আসমানী কিতাবের ওপর। আর শাবান মাসের ফযিলত অন্যান্য মাসের ওপর যেমন আমার মর্যাদা অন্যান্য সকল নবীর ওপর। আর রমযান মাসের ফযীলত অন্যান্য মাসের ওপর এমন, যেমন আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠত্ব তাঁর সকল সৃষ্টির ওপর। (আল্লামা আব্দুর রহমান সাফুরী: নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফায়িস ১ম খ- পৃ.১৪৬)
তিন.
হযরত আনাস রা. হতে আরো বর্ণিত আছে-
استغلوا بتلاوة القرآن بعد رؤية هلال شعبان والأغنياء يؤدون الزكاة كي يتهيأ الضعفاء والمساكين لصيام رمضان والأمراء يطلقون الأساري أو يعذبهم والتجار يقضون ما عليهم من الحقوق في هذا الشهر يعتكفون بعد رؤية هلال رمضان .
অর্থাৎ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবাগণ শাবান মাসের চাঁদ দেখার পরই কুরআন পাঠে লিপ্ত হয়ে যেতেন। ধনীগণ যাকাত দান করতেন, যাতে দুস্থ লোকজন রমজানের রোযা রাখার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেন। শাসনকর্তাগণ বন্দীদের এনে শাস্তির উপযুক্তদের শাস্তি প্রদান করতেন এবং অন্যদের ছেড়ে দিতেন। ব্যবসায়ীগণ এ মাসে পাওনা আদায় করে দিতেন। অতঃপর রমযানের চাঁদ দেখলেই এতেকাফে বসে যেতেন।
চার.
হাদীসে বর্ণিত আছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাসের চাঁদ দেখা মাত্রই নিম্নোক্ত দু’আ পড়তেন –
اللهم بارك لنا في رجب و شعبان و بلغنا رمضان
অর্থাৎ হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের ওপর বরকত নাযিল করুন এবং আমাদেরকে কল্যাণের সাথে রমজান পর্যন্ত পৌঁছান । (জামে সাগীর হাদীস নং ৯৮৭৪, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ২য় খ- পৃ.১৬৫ হাদীস নং ৪৩৯৫)।
এছাড়াও বিভিন্ন সহীহ হাদীসে এই মাসের মহান গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করা হয়েছে।
সুন্নাহর আলোকে এ মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অধিক রোযা রাখার কারণ ও হিকমাত:
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে অধিক পরিমাণে নফল রোযা পালন করতেন। কারণ, শাবান রমযান মাসের পূর্বের ও রমজানকে স্বাগত জানানোর মাস। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাস ছাড়া অন্যান্য মাসের তুলনায় শাবান মাসে বেশী নফল রোযা রাখতেন।
এক.
হাদীস শরীফে লিখিত আছে :
عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يُفْطِرُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يَصُومُ وَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ قَطُّ إِلاَّ رَمَضَانَ وَمَا رَأَيْتُهُ فِى شَهْرٍ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِى شَعْبَانَ
অনুবাদ : আম্মাজান আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোযা রাখতে থাকতেন, এমনকি আমরা বলতাম হয়তো তিনি আর রোযা ভাঙবেন না। আবার তিনি মাঝে মাঝে রোযা ভাঙতে থাকতেন, এমনকি আমরা বলতাম তিনি আর (নফল) রোযা রাখবেন না। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রমযান মাস ছাড়া অন্য কোন সময় গোটা মাস রোযা রাখতে দেখি নি। আর তাকে শাবান মাস অপেক্ষা বেশী রোযাও রাখতে দেখিনি। (আস সহীহু লিল বুখারী ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইসমাঈল বুখারী ১৯৪হিঃ হাদীস নং১৮৬৮; আস সুনানুল কুবরা; হাদীস নং২৪৮৭; মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং ২৪৮০১; সুনানে নাসায়ী; হাদীস নং২১৭৭)।
দুই.
কোন কোন সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান ও রমজান দু’মাস পুরোটাই রোযা রাখতেন। হাদীস শরীফের এসেছে-
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لاَ يَصُومُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ إِلاَّ شَعْبَانَ وَرَمَضَانَ.
অর্থাৎ উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো সময়ে ধারাবাহিকভাবে দু’মাস রোযা রাখতেন না। (আন নাসায়ীঃ সুনানে কুবরা হাদীস নং২৬৬১; ইমাম বায়হাকী সুনানে কুবরা হাদীস নং৭৭৫৫; জামে আত তিরমীযি আবু ইসা; হাদীস নং৭৩৬)।
তিন.
হযরত উসামা বিন যায়েদ রা. বর্ণনা করেন-
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي أَرَاكَ تَصُومُ فِي شَهْرٍ مَا لَا أَرَاكَ تَصُومُ فِي شَهْرٍ مثل مَا تَصُومُ فِيهِ، قَالَ: ” أَيُّ شَهْرٍ ؟ “، قُلْتُ: شَعْبَانُ، قَالَ: ” شَعْبَانُ بَيْنَ رَجَبٍ وَشُهِرِ رَمَضَانَ، يَغْفُلُ النَّاسُ عَنْهُ، يَرْفَعُ فِيهِ أَعْمَالَ الْعِبَادِ، فَأُحِبُّ أَنْ لَا يُرْفَعَ عَمَلِي إِلَّا وَأَنَا صَائِمٌ
অর্থাৎ, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমি তো আপনাকে শাবান মাসের মতো অন্য কোন মাসে এত অধিক রোযা রাখতে দেখি না। উত্তরে তিনি বলেন, এ মাসটি (শাবান) রমযান ও রজবের মধ্যবর্তী মাস। অনেক মানুষ এ মাসের ফযীলত সম্পর্কে উদাসীন থাকে অথচ বান্দার আমল সমূহ এ মাসে আল্লাহ তায়ালার সমীপে পেশ করা হয়। আর এ কারণে আমি চাই যে আমার আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে এমতাবস্থায় পেশ করা হোক যে অবস্থায় আমি রোযাদার।(আবু বকর বায়হাকী (মৃত৪৫৮হিঃ) শুয়াবুল ঈমান, মাকতাবাতুর রাশাদ; প্রথম প্রকাশকাল ২০০৩ ইং; হাদীস নং ৩৫৪০)।
চার.
অন্য হাদীছে আছে-
عن عائشة قالت : كان أحب الشهور إلى رسول الله صلى الله عليه و سلم أن يصومه شعبان بل كان يصله برمضان.
অর্থাৎ হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে রোযা রাখার ব্যাপারে অধিক পছন্দনীয় মাস হলো শাবান মাস। বরং মাঝে মাঝে তিনি শাবানকে রমজানের সাথে মিলিয়ে ফেলতেন।
عن عائشة : أن امرأة ذكرت لها أنها تصوم رجب فقالت إن كنت صائمة شهرا لا محالة فعليك بشعبان فإن فيه الفضل
অর্থাৎ হযরত আয়েশা রা. এর নিকট একদা এক মহিলা রজব মাসে নফল রোযা রাখার কথা বললে তিনি বলেন, যদি তুমি রমযান মাস ছাড়া অন্য মাসে রোযা রাখতে চাও তবে শাবান মাসে রোযা রাখ, কেননা উক্ত মাসের ফযীলত রয়েছে। (আল্লামা আব্দুর রহমান সাফুরী: নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফায়িস ১ম খ- পৃ.১৪৬)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসের সম্মানার্থে শাবান মাসের রোযা পালন করতেন। যেমন :
عن أنس : قال سئل النبي صلى الله عليه و سلم أي الصوم أفضل بعد رمضان؟ فقال شعبان لتعظيم رمضان قيل فأي الصدقة أفضل ؟ قال صدقة في رمضان.
অর্থাৎ হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো রমযানের পর কোন রোযা সর্বোত্তম? তিনি জবাবে বললেন, রমযানের সম্মানার্থে শাবানের রোযা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো তাহলে কোন দান সর্বোত্তম? তিনি বললেন, রমজান মাসের দান।
হযরত জুননুন মিসরী র. বলেন, রজব মাস পাপ পঙ্কিলতা থেকে আত্মরক্ষার মাস। শাবান মাস ইবাদত করার ও রমযানের মাহাত্ম অবলোকনের মাস।
তিনি আরো বলেন, রজব মাস জমিনে বীজ বপনের মাস, শাবান মাস শস্য ক্ষেত্রে পানি ঢালার মাস, আর রমযান মাস শস্য কর্তন করার মাস।
শাবান মাসে মুসলিম উম্মাহর কিছু করণীয় আমল:
১. দুআ করা : শাবান মাসের আগের মাস হচ্ছে রজব মাস। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাসের চাঁদ দেখা মাত্রই নিম্নোক্ত দু’আ পড়তেন –
اللهم بارك لنا في رجب و شعبان و بلغنا رمضان
অর্থাৎ হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের ওপর বরকত নাযিল করুন এবং আমাদেরকে কল্যাণের সাথে রমজান পর্যন্ত পৌঁছান । (জামে সাগীর হাদীস নং ৯৮৭৪,মাজমাউয যাওয়ায়েদ ২য় খ- পৃ.১৬৫ হাদীস নং ৪৩৯৫)।
এ জন্য পবিত্র রজব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর রমজানের চাঁদ দেখা পর্যন্ত উপরোল্লিখিত দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত বা মুস্তাহাব। সুতরাং তা এ মাসেও করা যাবে । যেহেতু পবিত্র রমজান মাস বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস, সেহেতু পূর্ব থেকেই এ মাসের ইবাদত-বন্দেগির জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটাই একজন মুমিনের কর্তব্য। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপরোক্ত দোয়া-ই প্রমাণ করে তিনি পবিত্র রজব মাসের শুরু থেকেই রমজানের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকতেন।
২. স্বাভাবিক ভাবে সকল ইবাদতই যেমন এর পূর্বেও বা পরের মাস গুলোতে করা হয়ে থাকে, তেমনি তা এ মাসেও করাতে শরীয়তের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। শুধুমাত্র মধ্য শাবানের পর হতে সিয়াম পালন ব্যতীত । কারণ রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “শাবান মাস অধের্ক হয়ে গেলে তোমরা আর রোযা রাখিও না। (মুসনাদ আহমাদ (২/৪৪২), আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ, এমনটি করা অর্থাৎ অবচ্ছিন্নিভাব শাবান ও রামাযান রোযা রাখা অনুচতি।)
৩. শাবানের দিন, তারিখ গণনা করা। বিভিন্ন হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব ও শাবানে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। রমজানে অধিক ইবাদতের জন্য সময়-সুযোগ বের করতেন। মানসিকভাবে তৈরি হতেন। আর এ কারণেই তিনি পবিত্র শাবানের দিন, তারিখ গুরুত্বসহকারে হিসাব রাখতেন। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন; রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবানের (দিন, তারিখ হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন যা অন্য কোনো মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না (সুনানে আবু দাউদ ১/৩১৮)।
৪. বেশী বেশী নফল রোজা রাখা। শাবান মাসে অধিকহারে নফল রোজা রাখা উত্তম। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। উম্মে সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; আমি নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শাবান ও রমজান ব্যতীত দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন; আমি নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শাবান মাসের মত এত অধিক (নফল) রোজা রাখতে আর দেখিনি। এ মাসের অল্প কিছুদিন ব্যতীত বরং বলতে গেলে সারা মাসটাই তিনি নফল রোজা রাখতেন (জামি তিরমিযী ১/১৫৫)।
শুধুমাত্র মধ্য শাবানের ফজিলত সম্পর্কে এবং একটি রোযা রাখার স্বপক্ষে রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে একটিও সহীহ মারফূ মুত্তাসীল হাদীস নেই । সুতরাং মধ্য শাবানে শুধুমাত্র একটি রোযা রাখা বিদআত ।
৫. যারা প্রতি মাসে “আইয়ামে বীয” এর তিন দিন অর্থাৎ ১৩, ১৪ ও ১৫ তারীখে নফল সিয়ামে অভ্যস্ত তারা এ মাসেও উক্ত নিয়তেই সিয়াম পালন করবেন ।
৬. যারা প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার নফল সিয়ামে অভ্যস্ত তারা এ মাসেও উক্ত দিনগুলিতে সিয়াম পালন করবেন । যদিও তা কখনও ভাগ্যক্রমে ১৫ শাবান হলেও তা বিদআত হিসেবে গণ্য হবে না । যদি তা শবে বরাতের নিয়ত পালন না করা হয়।
৭. মানতের সিয়াম ।
৮. ক্বাযা সিয়াম আদায় করা । আবু সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহাকে বলতে শুনেছি,আমার রামাযানের কিছু রোযা বাকি থাকত। সেগুলো আমি শাবান ছাড়া কাযা করতে পারতাম না।(বুখারী, কিতাবুস্ সাওম। মুসলিম, কিতাবুস সিয়াম। ইয়াহয়া বলেন: এর কারণ ছিল তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেবায় ব্যস্ত থাকতেন।)
অবশেষে বলব, এ মাস এবাদতের মাস, রাসুল স. এর মাস, মুমিন বান্দার রমজান অভিবাদনের মাস। তাই আল্লাহ তাআলা মাখলুকাতের প্রতি অনুগ্রহ করে বিশেষ বিশেষ দিন, রাত ও মাসকে ফজিলতময় ও বরকতপূর্ণ করেছেন। দিন, রাত, মাসের ইবাদতে অনেক ছাওয়াবের ঘোষণাও দিয়েছেন। তাই আমাদের উচিত এসব দিন, রাত, মাসের ফজিলত ও বরকত লাভে সচেষ্ট হওয়া। সর্বোপরি আল্লাহর সাহায্য কামনা করা ।
লেখক : প্রভাষক, দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা, ডেমরা এবং খতিব, হাজী ইয়াসিন সোহাগী জামে মসজিদ, নতুন বাজার , গুলশান, ঢাকা।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই